যে প্রশ্নগুলো অনেকেই করেন
সাইয়োনি কতদিন হল শুরু হয়েছে ?
সাইয়োনি ম্যাচমেকিং কনসালটেন্সি সার্ভিস শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে। তবে সাইয়োনির প্যারেন্ট প্রতিষ্ঠান "Matpreneur ltd." সরকারী ভাবে (Registrar of Joint Stock Companies And Firms) নিবন্ধিত হয় ২০২২ সালে। ২০২২ থেকে ২০২৩ এর এপ্রিল পর্যন্ত আমরা সময় ব্যয় করেছিলাম একটি অনলাইন ম্যাচমেকিং সফটওয়্যার তৈরি করতে। আমাদের প্ল্যান ছিল, ঘর থেকে না বের হয়েই, সরাসরি অনলাইনে যেন আপনারা পছন্দের প্রোফাইল পেয়ে যান। কিন্তু, প্রচুর মানুষের সাথে কথা বলে আমরা বুঝতে পারি, গার্ডিয়ানরা যারা এরেঞ্জড ম্যারেজের মূল উদ্যোক্তা, তারা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন না। তখন আমরা আমাদের সফটওয়্যার এর প্ল্যান থেকে সরে এসে সরাসরি কনসালটেন্সি সার্ভিসে চলে আসি। (যদিও সফটওয়্যার ততদিনে ওপেনিং হয়ে গিয়েছিল)
আপনাদের অফিস কোথায় এবং কিভাবে দেখা করবো ?
সাইয়োনির টিম রিমোট-অফিস করে। অর্থাৎ ফাউন্ডার এবং এমপ্লয়িরা যে যার বাসা থেকে সার্বক্ষনিক অনলাইনে যুক্ত থেকে অফিস করে। সাইয়োনির ফাউন্ডার তানভীর রহমানের বাসা ধানমণ্ডিতে এবং সেটাকেই অফিস হিসেবে ধরা হয়। আপনি যদি তানভীর রহমানের সাথে দেখা করতে চান আপনাকে 01707898691 এ যোগাযোগ করে এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এপয়েন্টমেন্টের সময় সাধারণত হয় বিকাল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে। একটি এপয়েন্টমেন্ট হয় সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টার।
প্রাসঙ্গিকভাবে বলা যায়, শুরুতে সাইয়োনির অফিস ছিল শ্যামলীতে। কিন্তু ঢাকার অসহনীয় জ্যাম, গরম ঠেলে হাতে গোনা কিছু ক্লায়েন্ট ছাড়া অফিসে কেউ আসতোনা। এরই প্রেক্ষিতে রিমোট অফিস করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যদিও আমাদের আগ্রহ আছে কিছুদিন পর ধানমণ্ডি কিংবা লালমাটিয়াতে অফিস নেয়ার।
সাইয়োনির ফাউন্ডার কে ?
সাইয়োনির ফাউন্ডার তানভীর রহমান। তিনি একই সাথে বাংলাদেশ এবং কানাডার সিটিজেন। দীর্ঘদিন থেকেছেন কানাডার Vancouver এবং Toronto শহরে। অল্প সময়ের জন্য সিঙ্গাপুরেও থেকেছেন পড়াশোনার সুবাদে। MBA করেছেন কানাডার University of British Columbia থেকে। তারও অনেক আগে পড়াশোনা করেছেন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে এবং নটরডেম কলেজে। বাংলাদেশ এবং কানাডা মিলে ১০ বছরের বেশি সময় কাজ করেছেন বিভিন্ন খ্যাতনামা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে (GlaxoSmithKline, Square, Lululemon, TD Canada etc). তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল "সামাজিক উদ্যোক্তা" (Social Entrepreneur) হবার, অর্থাৎ ব্যাবসার মাধ্যমে সমাজের দীর্ঘদিনের চলে আসা সমস্যার সমাধান করা। ২০২২ সালে তিনি কানাডা থেকে চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে এসে সাইয়োনি প্রতিষ্ঠা করেন। এরেঞ্জড ম্যারেজের ক্ষেত্রে অল্পশিক্ষিত ঘটক এবং প্রতারক ম্যারেজ মিডিয়াদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতেই তিনি এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
তানভীর রহমানের লিঙ্কডইন প্রোফাইল দেখতে এখানে ক্লিক করুন
সাইয়োনি কিভাবে ম্যাচমেকিং করে ?
সাইয়োনির কাছে আছে অনেক ছেলে এবং মেয়েদের বায়োডাটা এবং তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ। এছাড়াও প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নতুন ক্লায়েন্ট জয়েন করছে আমাদের সাথে। একজন নতুন ক্লায়েন্ট আসার পর তার বায়োডাটা এবং ছবি নিয়ে আমরা এনালাইসিস করি। তাদের পছন্দ-অপছন্দ শুনি ভাল করে। এরপর আমাদের সফটওয়্যারে ক্লায়েন্টের প্রোফাইল আপলোড করা হয়। সফটওয়্যার প্রাথমিক ভাবে আমাদের শর্ট-লিস্ট করে দেয় সেই ক্লায়েন্টের জন্য কতগুলো মানানসই প্রোফাইল আছে আমাদের বর্তমান ডেটাবেইসে। এরপর সাইয়োনির টিম ম্যানুয়ালি চেক করে দেখে ক্লায়েন্টের পছন্দ অনুযায়ী সবদিক দিয়ে ভাল ম্যাচ হচ্ছে কিনা। ম্যাচ হলে আমরা ক্লায়েন্টকে বায়োডাটাগুলো পাঠাই। ক্লায়েন্ট যাদেরকে পছন্দ করেন, তাদেরকে ক্লায়েন্টের বায়োডাটা পাঠিয়ে দেয়া হয়। এভাবে, যখন দুই পরিবারই বায়োডাটা থেকে প্রাথমিক ভাবে ভাল লাগা প্রকাশ করেন, তখন দুই পরিবারের গার্ডিয়ান/কন্টাক্ট পার্সনদের আমরা যোগাযোগ করিয়ে দেই। এরপর পরিবাররাই আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যান এবং যেখানে প্রয়োজন, সেখানে আমাদের পরামর্শ নেন।
আপনারা কিভাবে ছেলে এবং মেয়ে পক্ষকে যোগাযোগ করিয়ে দেন ?
ছেলে এবং মেয়ের পরিবার উভয়ই পসিটিভ হলে আমরা দুই পরিবারের দায়িত্বশীল গার্ডিয়ান বা কন্টাক্ট পার্সনদের ফোন নাম্বার আদান প্রদান করে দেই। সাইয়োনির কনসালট েন্টরা সরাসরি কোন রেস্টুরেন্ট কিংবা বাসায় যায়না।
আপনারা নিজেদের ম্যারেজ মিডিয়া না বলে ম্যাচমেকিং কনসালটেন্ট বলছেন কেন ?
কনসালটেন্ট দিয়ে বোঝানো হয় এমন পেশাজীবীদের যারা নিজের বিশেষ দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে মানুষকে সার্ভিস এবং পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বেশ কিছু কারণে আমরা নিজেদের কনসালটেন্ট বলে থাকি।
প্রথমত, সাইয়োনিতে ফাউন্ডার তানভীর রহমান দীর্ঘদিন কাজ করেছেন বিভিন্ন কোম্পানির সিস্টেম, টিম এবং প্রসেস ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে। তার কাছে মনে হয়েছে বাংলাদেশের এরেঞ্জড ম্যারেজের ক্ষেত্রে অত্যন্ত মান্ধাতা আমলের কিছু প্র্যাকটিস চলে আসছে, যা পরবর্তীতে কেউ দায়িত্ব নিয়ে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন নি । সেই পুরনো, অকার্যকর সিস্টেমকে পরিবর্তনের জন্য তানভীর তার দেশ বিদেশের সমস্ত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে একটি এফিশিয়েন্ট এবং ইফেক্টিভ সিস্টেম তৈরি করার চেষ্টা করছেন। যেমন- ম্যাচমেকিং এর জন্য কাগজের বায়োডাটার স্তূপে হারিয়ে না গিয়ে আমরা সফটওয়্যার ব্যবহার করি।
দ্বিতীয়ত, প্রফেশনাল মাইন্ডসেট। একজন কনসালটেন্টের দায়িত্ব ক্লায়েন্টের সমস্যা কে নিজের সমস্যা মনে করে আন্তরিকভাবে তা সমাধান করা। সাইয়োনিতে যতদিন একজন ক্লায়েন্টের বিয়ে না হয়, ততদিন নিয়মিত আমরা তার জন্য লাইফ পার্টনার খোঁজার চেষ্টা করতে থাকি।
তৃতীয়ত, আন্তরিক ক্লায়েন্ট সার্ভিস। আমাদের এক্সিকিউটিভরা আপনাকে সহযোগিতা করার জন্য সপ্তাহে ৬ দিন, সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত এভেইলেবল আছেন। অন্যান্য অনেক কোম্পানি যারা প্রথম দিকে আগ্রহ দেখিয়ে পরে ফোন ধরা বন্ধ করে দেয়, এমনকি ক্লায়েন্টের নাম্বার ব্লক করে দেয়। সাইয়োনিতে এজাতীয় কিছু হবার কোন সম্ভাবনা নেই।
রেজিস্ট্রেশন না করে কোন বায়োডাটা দেখানো যাবেনা ?
কোন নতুন ক্লায়েন্ট যখন আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন, আমরা শুরুতেই তার প্রোফাইল এবং পছন্দ শুনে একটা আইডিয়া দিয়ে দেই যে তার সাথে মানানসই আনুমানিক কতগুলো বায়োডাটা আমাদের কাছে আছে। যদি কোন ক্লায়েন্ট স্যাম্পল বায়োডাটা দেখতে চান, আমরা তাকে দুয়েকটি বায়োডাটা পাঠাই সৌজন্য হিসেবে। তবে ক্লায়েন্ট যদি তাদের মধ্যে কাউকে পছন্দ করেন এবং যোগাযোগ করতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে ড্রপবক্স অথবা কনসালটেন্সি এই দুটি সার্ভিসের যেকোন একটিতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।