সাইয়োনি কিভাবে স্পেশাল ?
সাইয়োনি বাংলাদেশের আর ১০ জন ঘটক বা ম্যারেজ মিডিয়ার মত না। সাইয়োনি একটি ম্যাচমেকিং কনসালটেন্সী ফার্ম। সাইয়োনি একটি অঙ্গীকারের নাম। জীবনের সবচেয়ে বড় একটি সিদ্ধান্তে পুরোটা সময় সাইয়োনি আপনার পাশে থাকবে এটাই আমাদের ওয়াদা।
১
ভেরিফাইড প্রোফাইল
সাইয়োনিতে রেজিস্ট্রেশনের আগে প্রত্যেক ক্যান্ডিডেট কিংবা তার গার্ডিয়ানের সাথে কথা বলা হয়। শিক্ষিত এবং ভদ্র পরিবার পরিবার হলেই কেবল আমরা তাদেরকে রেজিস্ট্রেশন করাই। এমন বহু উদাহারণ আছে যখন ক্লায়েন্টের ব্যবহার অসুন্দর দেখে তাদেরকে আমরা বিনয়ের সাথে ফিরিয়ে দিয়েছি। সুন্দর ব্যবহার ছাড়াও আমরা খেয়াল করি ক্লায়েন্ট বিয়ের ব্যাপারে কতটুকু সিরিয়াস, তাদের পছন্দ, অপছন্দ কতখানি বাস্তবসম্মত এবং আরও কিছু বিষয়।
পাশাপাশি, সব ক্লায়েন্টের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে রেজিস্ট্রেশনের সময় আমরা ক্যান্ডিডেটের গভর্নমেন্ট ইস্যুড আইডি নেই ( ন্যাশনাল আইডি, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স)।
২
উচ্চশিক্ষিত কনসালটেন্টস
বাংলাদেশের সাধারণ ম্যারেজ মিডিয়া বা ঘটক শ্রেণীর মাঝে একটা ব্যাপার খুব কমন, আর তা হচ্ছে তারা খুব একটা উচ্চশিক্ষিত না, এবং তাদের আর্থিক ও পারিবারিক অবস্থান দুর্বল। গত ৪০ বছরের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, নিম্নবিত্ত শ্রেণির অল্পশিক্ষিতরা মানুষরাই এই প্রফেশনে বেশি এসেছেন। আবার শিক্ষিত মানুষ, কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণেই মূলত ঘটকালি পেশায় এসেছেন এমন প্রচুর উদাহারণ পাওয়া যাবে। যেমন- সরকারী স্কুলের টিচার।
এতে করে কয়েক ধরনের সমস্যার তৈরি হয়েছে। প্রথমত, এখনকার শিক্ষিত পরিবার কিংবা যাদের বিয়ের জন্য কথা হচ্ছে, তারা "ঘটক" বা "ম্যারেজ মিডিয়া" শুনলেই অস্বস্তিতে পড়ে যান। যেহেতু ঘটক এবং শিক্ষিত পরিবারদের মধ্যে সামাজিক এবং আর্থিক বিরাট তফাত আছে, সেখানে সামাজিক "বন্ডিং" বা "সম্পর্ক" তৈরি হয়না। ক্লায়েন্টরা ঘটক/ম্যারেজ মিডিয়ার সাথে প্রাণখুলে মিশতে পারেন না, কথা বলেও আরাম পান না।
দ্বিতীয়ত, ঘটক এবং ম্যারেজ মিডিয়ারা "Matchmaking Process" কে খুব একটা ইম্প্রুভ করতে পারেননি। সাদাকালো প্রিন্ট করা বায়োডাটা আর ঝাপসা হয়ে যাওয়া কিছু ছবি দিয়ে তাড়া ম্যাচমেকিং করেন।
সাইয়োনির ফাউন্ডার এবং কনসালটেন্টরা সবাই উচ্চশিক্ষিত এবং প্রতিষ্ঠিত ফ্যামিলির সন্তান। ক্লায়েন্টরা অন্যান্য ম্যারেজ মিডিয়া/ ঘটকদের সাথে কথা বলার পর যখন সাইয়োনিতে আসেন, তারা সহজেই পার্থক্য বুঝতে পারেন।
সাইয়োনির লক্ষ্য থাকে কিভাবে বিভিন্নভাবে ম্যাচমেকিং প্রসেসকে সহজ এবং সবার জন্য গ্রহণযোগ্য করে তোলা যায়। আমরা সফটওয়্যার বেইসড ম্যাচমেকিং করে থাকি, যা হাতে হাতে বায়োডাটা দেখার চেয়ে অনেক বেশি নিখুঁত। বায়োডাটা কে স্ট্যান্ডার্ডাইজ করার উদ্দেশ্যে আমরা নিজে থেকে প্রত্যেক ক্লায়েন্টকে বায়োডাটা ডিজাইন করে দেই। এতে করে, সাইয়োনির ছাড়াও ক্লায়েন্টরা অন্যখানে সেই বায়োডাটা দিতে পারেন।
৩
আন্তরিক ক্লায়েন্ট সার্ভিস
সাধারণ ম্যারেজ মিডিয়াদের ব্যাপারে যে অভিযোগ আমরা বারবার পাই তা হল, তারা রেজিস্ট্রেশনের আগ পর্যন্ত ক্লায়েন্টের সাথে খুব সুন্দর ব্যাবহার করে এবং রেজিস্ট্রেশনের পরে আস্তে আস্তে দূরত্ব তৈরি করে। ক্লায়েন্ট যদি বেশি তাগাদা দেয়, অনেক সময় ক্লায়েন্টের ফোন নাম্বার ব্লক করে দেয়া হয়। এমন অভিযোগও আমরা পেয়েছি যে নামসর্বস্ব মিডিয়া তাদের অফিস ই পাল্টে ফেলেছে রেজিস্ট্রেশনের টাকা নেয়ার পর।
এর বিপরীতে, সাইয়োনিতে আছে ডেডিকেটেড ক্লায়েন্ট সার্ভিস এক্সিকিউটিভ যাকে অফিস চলাকালীন সময়ে সবসময় আপনারা পাশে পাবেন। শুধু তাই না, কোন কারণে কমিউনিকেশন এক্সিকিউটিভ ব্যাস্ত থাকলে, আমাদের ম্যাচমেকিং এক্সিকিউটিভ ক্লায়েন্ট কল রিসিভ করেন। তাদের কেউ যদি এভেইলেবল না থাকেন, CEO, তানভীর রহমান সরাসরি কল রেস্পন্ড করেন। অর্থাৎ, সাইয়োনিতে কল দিয়ে কাউকে না কাউকে আপনি পাবেন।
আমাদের হোম পেইজে, "সাইয়োনির ম্যানেজমেন্ট" সেকশনে প্রত্যেকের সাথে যোগাযোগের জন্য আলাদা Whatsapp Number দেয়া আছে।
৪
সফটওয়্যার বেইসড ম্যাচমেকিং
ট্র্যাডিশনালি বাংলাদেশে সবসময় হাতে হাতে বায়োডাটা আদান প্রদান হতো। এসব প্রিন্ট করা বায়োডাটা একটা ফাইলে বন্দী করে ঘটক বা ম্যারেজ মিডিয়া বিভিন্ন মানুষের বাসায় বাসায় ঘুরে বেড়ান। যেহেতু ঘটকদের কাছে খুব বেশি বায়োডাটা থাকেনা, কাজেই অল্প কিছু বায়োডাটার সব তথ্য তাদের মুখস্থ থাকে। কিন্তু, যখন শত শত প্রোফাইল নিয়ে কাজ করতে হয় , তখন এই মুখস্ত বিদ্যা আর কাজে লাগেনা। তখন প্রোফাইল ম্যাচ করানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়, কারণ একেকজন ক্লায়েন্ট প্রায় ৫-১০ টি শর্ত জুড়ে দেন তাদের পছন্দ অপছন্দ বোঝাতে গিয়ে। কয়েকশো ক্লায়েন্টের সব মিলিয়ে হাজার হাজার ইনফরমেশন।
সাইয়োনির কাছে আছে নিজস্ব ম্যাচমেকিং সফটওয়্যার যা দিয়ে মাত্র কয়েক ক্লিকেই বলে দেয়া সম্ভব একজন ক্লায়েন্টের সাথে মানানসই আনুমানিক কতগুলো বায়োডাটা আমাদের কাছে আছে। শুধু তাই না, কোন নির্দিস্ট প্রোফাইলের সাথে অন্য একটি প্রোফাইলের কত পার্সেন্ট (শতকরা) মিল বা অমিল আছে তাও বলে দেয়া সম্ভব আমাদের সফটওয়্যার ব্যাবহার করে।
৫
ফেইসবুক ম্যাচমেকিং গ্রুপ
গত ৫ বছরের ম্যাচমেকিং কন্টেক্সট এনালাইসিস করলে দেখা যায়, অনেক মানুষই ঝুঁকছেন ফেইসবুক বেইসড বিভিন্ন ম্যাচমেকিং গ্রুপের দিকে। এসব গ্রুপ থেকে অনেকের বিয়ে হয়েছে আবার অনেকে হয়েছে প্রতারিত। ফেইসবুক গ্রুপের পসিটিভ কিছু দিক যেমন আছে, তেমনি আছে নেগেটিভ দিক।সাইয়োনি নতুনত্বে বিশ্বাস করে, বিশ্বাস করে ম্যাচমেকিং শুধুই গণ্ডির মধ্যে থাকার বিষয় নয়। আধুনিক সময়ের চাহিদাকে গুরুত্ব দিলে ফেইসবুক ম্যাচমেকিং কে এড়িয়ে যাবার সুযোগ নেই। সেই ভাবনা মাথায় রেখে, অক্টোবর ২০২৩ এ শুরু হয় সাইয়োনির নিজস্ব ফেইসবুক ম্যাচমেকিং গ্রুপ "Matchmaking By Saiyonee"। এই গ্রুপে প্রায় ৩.৫ হাজার মেম্বার আছেন এখন। মেম্বারদের মধ্যে সাইয়োনির রেজিস্ট্রার্ড মেম্বাররা যেমন আছেন, তেমনি তাদের পরিচিত অনেকেও আছেন। ক্লায়েন্ট রাজি হলে তাদের বায়োডাটা এই গ্রুপে আমরা পোস্ট করি। গ্রুপ থেকেও আমরা অনেক প্রস্তাব পাই বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য।
৬
ভ্যালু ফর মানি
কিছু মিডিয়া রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১০-৩০ হাজার টাকা নেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে রেজিস্ট্রেশনের টাকা। একবার তা পেয়ে যাবার পর বিয়ে হোক বা না হোক, তাদের দায়বদ্ধতা ততটা থাকেনা। অর্থাৎ সাফল্য আসার আগেই তারা নিজের লাভ আদায় করে নেন। অনেক মিডিয়া আবার ক্লায়েন্টের আর্থিক অবস্থা বুঝে এমাউন্ট বাড়িয়েও দেন। আবার বিয়ে হবার পর তারা ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত চার্জ করেন।
সাইয়োনির শুরুটা ব্যাবসার লাভের কথা চিন্তা করে ছিলোনা, এবং এখনও তা নেই। সাইয়োনির স্বপ্ন এমন একটি প্রতিষ্ঠান এবং ব্র্যান্ড তৈরি করা যাকে ক্লায়েন্টরা মন থেকে বিশ্বাস করতে পারবেন। এমন একটি ব্র্যান্ড দাঁড়াবে, যেন বাংলাদেশের শিক্ষিত মানুষদের এরেঞ্জ ম্যারেজের জন্য অন্য কোন অর্থ-লোভী প্রতিষ্ঠানের কাছে যেতে না হয়।
শুধু এই ভাবনার কারণে, এপ্রিল ২০২৩ এ শুরু হবার পর প্রথম ৮ মাস কোন ক্লায়েন্টের কাছ থেকে আমরা রেজিস্ট্রেশন ফি নেইনি। সাইয়োনিতে রেজিস্ট্রেশন ফি নেয়া শুরু হয় ডিসেম্বর ২০২৩ থেকে। তাও খুব নাম মাত্র এমাউন্ট দিয়ে শুরু করা হয়, মাত্র ৫০০ টাকা। বর্তমানে সাইয়োনির দুটি ভিন্ন ম্যাচমেকিং সার্ভিসের রেজিস্ট্রেশন ফি মাত্র ১৫০০ এবং ৩০০০ টাকা। এই এমাউন্টের মধ্যেই আবার প্রত্যেক ক্লায়েন্টকে আমরা একটি ডিজাইন করা বায়োডাটা বানিয়ে দেই, যেটা তারা চাইলে যেকোন জায়গায় শেয়ার করতে পারে।
৭
প্রাইভেসী প্রটেকশন
সাইয়োনি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে প্রত্যেক ক্লায়েন্টের প্রাইভেসি নিশ্চিত করার জন্য। যেমন, অধিকাংশ ক্লায়েন্ট আমাদের যে বায়োডাটা দেন, সেখানে তাদের ফোন নাম্বার এবং বাসার ঠিকানা থাকে। আমরা সেই বায়োডাটা সরাসরি কাউকে দেইনা। আমরা আমাদের মত করে একটি বায়োডাটা তৈরি করি, যেখানে বায়োডাটার সব নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার মুছে দেয়া হয়। শুধু তথ্য থাকে। এতে করে ক্লায়েন্ট কিংবা তার ফ্যামিলির কাউকে সরাসরি আর চেনা যায়না।
এছাড়াও, বায়োডাটা দেখার পর, দুই পরিবার পসিটিভ হবার পরেই আমরা নাম্বার এক্সচেঞ্জ করে দেই, তার আগে না। আবার, আমাদের ফেইসবুক গ্রুপে ক্লায়েন্টের বায়োডাটা পোস্ট করার পর (অনুমতি নিয়েই) অনেকে যখন আগ্রহ প্রকাশ করেন, আমরা তাদেরকে কখনো সরাসরি ক্লায়েন্টের ফোন নাম্বার দিয়ে দেইনা। ক্লায়েন্ট ও যদি আগ্রহীদের বায়োডাটা পছন্দ করে, শুধু সেক্ষেত্রেই আমরা ফোন নাম্বার শেয়ার করি।
৮
শিক্ষিত ফ্যামিলিদের নির্ভরতার জায়গা
সাইয়োনিতে রেজিস্ট্রেশনের আগে প্রতিটি ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলা হয়। শুধু ক্যান্ডিডেট এর যোগ্যতা দেখে আমরা প্রোফাইল এক্সেপ্ট করিনা। আমরা বোঝার চেষ্টা করি তাদের পারিবারিক শিক্ষা, আর্থিক অবস্থা, স্ট্যাটাস। সবদিক এনালাইসিস করেই ক্লায়েন্টকে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমন্ত্রণ জানাই আমরা।
সাইয়োনির ওপর তাই বিশ্বাস রাখছেন সমাজের সবচেয়ে শিক্ষিত এবং আধুনিক পরিবারেরা। আমাদের ক্লায়েন্ট হিসেবে আছেন সাবেক নৌবাহিনী প্রধান, সচিব, বিচারপতি, অতিরিক্ত সচিব, শীর্ষস্থানীয় ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারদের ছেলে মেয়েরা।
This is a Paragraph. Click on "Edit Text" or double click on the text box to start editing the content.